পিরিয়ডে_খাদ্যাভ্যাস
#পিরিয়ডে_খাদ্যাভ্যাস
পিরিয়ড বা মাসিক প্রত্যেক নারীর কাছেই একটি পরিচিত শব্দ। ওই সময় নারীর খাদ্যাভ্যাস বা খাদ্যতালিকায় কী থাকা উচিত, তা জানতে আগ্রহী অনেকেই।
মাসিক প্রত্যেক মেয়ের কাছে একটি চ্যালেঞ্জের সময়। এ সময় তাঁদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এ সময় বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ হতে পারে, যেগুলোকে সাধারণত মাসিকের পূর্ববর্তী লক্ষণ হিসেবে বলা হয়ে থাকে। মাসিকের পূর্ববর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্র্যাম্পিং হওয়া, অথবা আমাদের মুড সুইয়িং হয়ে যাওয়া, আমাদের কোমরের পৃষ্ঠদেশে ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। সে সময় খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত, যেগুলো সাধারণত আমাদের মাসিকজনিত বা মাসিকের পূর্ববর্তী সময়ে যে সমস্যাগুলো হয়, সেগুলো থেকে পরিত্রাণের জন্য খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়টি নিয়ে জানব।
২০১৮ সালে ১৮ থেকে ২২ বছর মেয়েদের ওপর হওয়া একটি স্টাডিতে দেখা গেছে, যাঁরা খাদ্যতালিকায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার, যেমন সামুদ্রিক বিভিন্ন ধরনের মাছ অথবা তাঁরা খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের বাদাম অথবা তাঁরা খাদ্যতালিকায় ফ্ল্যাক্সিড রেখেছেন, তাঁদের জন্য কিন্তু মাসিকজনিত যে ব্যথাটা... সাধারণত মাসিকের পূর্ববর্তী বা মাসিক চলাকালে হয়ে থাকে, সেটা কিছুটা হলেও প্রশমণের ক্ষেত্রে এই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারগুলো ভূমিকা রাখে।
সাধারণত এ সময় আমাদের আয়রনজাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ, আয়রনজাতীয় খাবার আমাদের শরীর থেকে এ সময়ে যে রক্ত বের হয়ে যায়, এ সময় হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। আয়রনজাতীয় খাবারের পাশাপাশি অবশ্যই ফোলেট ও ভিটামিন বি৬-জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ, ভিটামিন বি৬ ও ফোলেটজাতীয় খাবার আমাদের শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
সাধারণত আয়রনজাতীয় খাবার দুই ধরনের উৎস থেকে পেয়ে থাকি। একটি হচ্ছে হিম উৎস, আরেকটি হচ্ছে নন-হিম উৎস। হিম উৎস সাধারণত আমরা গরু বা খাসির মাংস, কলিজা এবং সামুদ্রিক বিভিন্ন ধরনের মাছ, ডিম থেকে পেয়ে থাকি। নন-হিমজাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় রাখার সাথে সাথে আমাদের অবশ্যই ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার রাখতে হবে। কারণ, ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের যেসব নন-হিমজাতীয় আয়রন আছে, সেটি শোষণে সাহায্য করে থাকে। পাশাপাশি আমাদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং যেসব খাবার থেকে আমরা পানি পেয়ে থাকি, সেসব ফল ও শাকসবজি আমাদের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
পুষ্টিবিদের পরামর্শ, খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ম্যাগনেশিয়ামজাতীয় খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ম্যাগনেশিয়ামজাতীয় খাবার আমাদের মাসিকের পূর্ববর্তী যেসব সমস্যা বা জটিলতা দেখা দেয়, সেগুলো প্রশমণে সাহায্য করে থাকে। খাদ্যতালিকায় আমাদের এমন খাবার রাখতে হবে, যেগুলো আমাদের ভালো মুড তৈরি করতে সাহায্য করে। কারণ, মাসিকের সময় দেখা যায় যে মানসিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা বা জটিলতা দেখা দিতে পারে। সে জন্য আমাদের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ম্যাগনেশিয়ামজাতীয় খাবার রাখতে হবে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড-জাতীয় খাবার রাখতে হবে এবং আমাদের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে ফাইবারজাতীয় খাবার। ম্যাগনেশিয়ামের একটি চমৎকার উৎস হচ্ছে কলা। আমরা কিন্তু অনেকেই মনে করে থাকি, কলা খেলে আমাদের ওজন বেড়ে যাবে, সে ক্ষেত্রে এ সময় আপনারা খাদ্যতালিকায় কলা রাখতে পারেন, তবে সে ক্ষেত্রে ক্যালোরি ব্যালেন্স করে নিতে হবে। এ সময় অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার বা ফাস্টফুড-জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে, বিভিন্ন ধরনের সোডিয়ামযুক্ত এবং অতিরিক্ত লবণ ও চিনিযুক্ত খাবার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। পাশাপাশি প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। এর মাধ্যমে কিন্তু আমরা আমাদের মাসিক চলাকালে শারীরিকভাবে এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারব।
Post a Comment