নিম পাতার ব্যবহার
নিম গাছ পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী। নিম একটি ঔষধি গাছ ডাল, পাতা, রস সবই কাজে লাগে। নিম একটি বহুবর্ষজীবী ও চিরহরিৎ বৃক্ষ। বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে গত ৫ হাজার বছর ধরে। নিমে রয়েছে ১৩০ টি ঔষধি গুন। নিম ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে নিম খুবই কার্যকর । আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও এর জুরি মেলা ভার।
আসুন জেনে নেওয়া যাক নিমের উপকারিতা গুলো?
১:খুসকির চিকিৎসায়ঃ নিম ব্যাকটেরিয়া ও ছএাক নাশক উপাদানের জন্য খুশকির চিকিৎসায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিম মাতার তালুর শুষ্কতা ও চুলকানি দূর করে। যদি চার কাপ পানিতে এক মুঠো নিমের পাতা দিয়ে গরম করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত পানিটি সবুজ বর্ণ ধারন করে। এই পানি ঠান্ডা হলে চুলে শ্যাম্পু করার পর নিমের পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। নিমের পানি কন্ডিশনার মত কাজ করবে। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করুন। যতদিন খুশকি দূর না হয়।
২:ওজন কমাতেঃ নিমের ফুল মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে। শরীরের চর্বি ভাংতে সাহায্য করে। এক মুঠো নিম ফুল চূন করে নিন। এর সাথে এক চামুচ মধু এবং আধা চামুচ লেবুর রস দিয়ে ভালোভাবে মিশান। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই মিশ্রণটি পান করুন। দেখবেন অল্প কিছুদিনের মধ্যে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
৩:রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণেঃ নিম পাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চমৎকার ভাবে কাজ করে। নিমের পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও রক্তনালী কে প্রসারিত করে। এবং রক্তে সংবহন উন্নত করে। প্রতিদিন সকালে নিমের কচি পাতার রস পান করুন। তাহলে আপনার রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ হবে।
৪:ছত্রাকের ইনফেকশন দূর করতেঃ যদি আপনার পায়ে কোন ফাংগাল ইনফেকশন থাকে তাহলে নিম পাতা ব্যবহার করুন। নিমে রয়েছে নিম্বডল এবং জেডুনিন আছে। যা ফাংগাল ধ্বংস করে। নিম পাতার পেস্ট বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে ইনফেকশন নিরাময় করা সম্ভব।
৫:ত্বকের সমস্যা দূর করতেঃ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন : ব্রণ , একজিমা ও সোরিয়াসিস এর সমস্যা দূর করতে পারে নিম।
৬: ব্যাথার উপশম দূর করতেঃ নিমপাতা নিমের বীজ ও বাকল বাতের ব্যাথা সারাতে ঔষধি হিসেবে কাজ করে। বাতের ব্যথা নিমের তেলের মাসাজ ও খুব উপকারী। নিমপাতা নিমের বীজ ও বাকল বাতের ব্যথা সারাতে ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
৭: চোখের চুলকানি দূর করতেঃ চোখের চুলকানি হলে নিম পাতা পানিতে ১০ মিনিট সিদ্ধ করে। এবং পানি ঠান্ডা করার পর চোখ ধুয়ে নিন। কিছুক্ষণ পর চোখের চুলকানি দূর হবে।
৮: জন্ডিসের সমস্যা দূর করতেঃ জন্ডিস হলে প্রতিদিন সকালে নিম পাতার রস। একটু মধু মিশিয়ে খালি পেটে খেতে হবে। ২৫ থেকে ৩০ ফোটা নিমের রস। একটু মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে জন্ডিস ভালো হয়। জন্ডিস হলে ১ চা চামুচ রসের সাথে। একটু মধু মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খান। এভাবে প্রতিদিন খেলে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের সমস্যা দূর হবে।
৯: ব্রণের সমস্যা দূর করতেঃ কিছু নিমপাতা গুঁড়ো করে পেস্ট বানিয়ে ব্রণে লাগিয়ে দিন। যতদিন পর্যন্ত ব্রণ না শুকাবে। ততদিন পর্যন্ত এইভাবে লাগাবেন। আপনার ব্রণের সমস্যা দূর করতে সক্ষম নিম। মুখের যেকোনো ধরনের ফুসকুড়ি ডার্ক, স্পোর্ট এবং দীর্ঘমেয়াদী ঘা দূর করে নিম।
১০:রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটেঃ নিমপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। এন্টি ভাইরাস এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রপার্টিজ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। পাশাপাশি নানা বিদের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। প্রসঙ্গত নিমের উপস্থিতি আন্টি অক্সিডেন্ট রক্ত রক্তের জমতে থাকা টক্সিক উপাদান শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার থেকে ছোট-বড় নানা রোগ কোনটাই দ্বারের কাছে ঘেষতে পারে না। ভারতীয় উপমহাদেশে ভাইরাল রোগ নিরাময় নিম ব্যবহৃত হয়। নিম পাতার রস ভাইরাস নির্মূল করে। চিকেন পাস, হাম এবং অন্য চর্মরোগ হলে নিম পাতা পানিতে সিদ্ধ করে গোসল করলে ভালো হয়। নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে ত্বকের জ্বালা পোড়া ও চুলকানির রোগ নিরাময় হয়।

Post a Comment